মহাশিব রাত্রিতে ভক্তের ঢল কেশিয়াড়া শিব মন্দিরে ,জানুন শিবরাত্রি সম্পর্কে কিছু কথা

Rangamati Express
0
প্রতীকী ছবি 

রঞ্জিত ঘোষ , বাঁকুড়া ঃ আজ মঙ্গলবার ফাল্গুন মাসের শিব চতুর্দশীর দিন  অর্থৎ মহা শিব রাত শিবরাত্রির ব্রত পালনের মোক্ষম  দিন । জেলা-রাজ্য দেশজুড়ে পালিত হয় এই ব্রত। বাঁকুড়ার বিভিন্ন প্রান্তের  মতো গঙ্গাজলঘাটির কেশিয়াড়া শিব মন্দিরেও সমারোহে পালিত হল  মহা শিবরাত্রি। মঙ্গলবার সকাল থেকেই শতাব্দী প্রাচীন কেশিয়াড়া শিব মন্দিরে দেখা   গেল শিব ভক্তদের ঢল।


আসুন আমরা জেনে নিই শিবরাত্রি সম্পর্কে কিছু কথা:-

শিব  হল হিন্দু শৈব সম্প্রদায়ের  মানুষদের কাছে  এক আবেগ,এক অনুভুতি বিশ্বাসের এক মূর্ত প্রতীক।কখনো তিনি সৃষ্টি কর্তা,প্রলয় নাচন নেচে  কখনো বা তিনি ধ্বংস কর্তাও ।


হিন্দু শৈব সম্প্রদায়ের মানুষদের কাছে শিব চতুর্দশী   অর্থাৎ মহশিবরাত্রি হল এক বিশেষ নির্ঘণ্ট।

প্রতিবছর  ফাল্গুন মাসের কৃষ্ণ পক্ষের চতুর্দশী তিথিতে এই ব্রত পালন করা হয়ে থকে। অন্ধকার ও অজ্ঞতা দূর করে আলোর প্রতিফলন ঘটানোর জন্য মূলত এই ব্রত  পালন করা হলেও অনেক কুমারী মেয়েরা শিবের মতো বর প্রাপ্ত করার জন্য এই ব্রত পালন করে থকে। ব্রত পালনের রয়েওছে বিশেষ কিছু আচার-আনুষ্ঠান।

 

শিবরাত্রি ব্রত কেন পালন করা হয় ? এ বিষয়ে একাধিক মত থাকলেও 


শিব মহাপুরণ অণুসারে, এই  রাত্রেই নাকি শিব সৃষ্টি,স্থিতি ও প্রলয়ের মহা তাণ্ডব নৃত্য করে ছিলেন। আবার এও প্রচলিত আছে যে, এই শিব রাত্রিতেই নাকি ভগবান শিব ও পার্বতী অর্থাৎ পরম পুরুষ ও পরা প্রকৃতির মিলন ঘটেছিল। এই শিব চতুর্দশীর রাত্রিতেই শিব তার প্রতীক লিঙ্গ তথা শিব লিঙ্গ রূপে প্রকাশিত হয়ে জীবের পাপ নাশ করে মুক্তির পথ দেখিয়েছিলেন। 


অপরদিকে শিব মহাপুরানে বর্ণিত  রয়েছে আরো একটি কাহিনী। সুপ্রাচীন কালে কাশিধামে এক ব্যধ বাস করত। একদিন সে শিকারে বিরিয়ে বনে ঘুরে ঘুরে কোনো  শিকার না পাওয়ায় বনে পথ হারিয়ে ফেলে। অভুক্ত ,বিষণ্ণ অবস্থায় তখন সে একটি গাছের নিচে আশ্রয় নেয় এবং  গাছ থেকে  একটি করে পাতা ছিড়ে নিচে ফেলতে থাকে। গাছটি ছিল  একটি বেল গাছ। গাছের নীচেই ছিল একটি শিবলিঙ্গ তখন সেই ছেড়া পাতা গুলি ওই শিব লিঙ্গের ওপর পড়তে  থাকে। আর সেই দিনটি ছিল শিব চতুর্দশীর দিন। এর ফলে তার অজান্তেই ব্যাধের শিব রাত্রির ব্রত পালনের পুণ্য সঞ্চয় হল।

এর কিছুকাল পরে ব্যাধ মারা গেলে যমদূতেরা তাকে নিতে আসে। কিন্তু যেহেতু সে শিবরাত্রি ব্রত পালনের পুণ্য সঞ্চয় করেছিল সে হেতু শিব দূতেরা যম দুতেদের হারিয়ে ব্যাধের মুক্তি ঘটায়।তখন জামরাজ শিকার করেন, যে ব্যক্তি শিবরাত্রি ব্রত পালন করে এবং শিব ভক্ত যে জন ,তার ওপর যমের কোনো আধিকার থাকেনা। তখন থেকে এই জনশ্রুতিকে ভর করেই মর্ত্যলোকে প্রচলিত হল শিব চতুর্দশী বা মহাশিবরাত্রির ব্রত পালন।

এই ব্রত পালনের জন্য রয়েছে একাধিক আচার অনুষ্ঠান।

সেই মতো বাঁকুড়ার বিভিন্ন প্রান্তের সাথে সাথে কেশিয়াড়া শিব মন্দিরেও সমারোহে পালিত হল শিবরাত্রি ব্রত পালনের মতো ধর্মীয় অনুষ্ঠান। 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)