অরবিন্দ ভট্টাচার্য , ( রাঙামাটি এক্সপ্রেস ) : হাড়হিম হত্যাকাণ্ড। একই পরিবারের চারজন খুন মা, দাদা, বৌদি এবং ভাইঝিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ উঠছে পরিবারের ছোট ছেলের বিরুদ্ধে। বুধবার রাতে চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়া থানার এমসি ঘোষ লেনে। পারিবারিক বিবাদের জেরে একই পরিবারের চারজন খুন হয়েছে। বাড়ির মেজ ছেলে, স্ত্রী-কন্যা ও মাকে খুনের অভিযোগ দম্পতির বিরুদ্ধে। ঘটনার পরেই খুনের অভিযোগে আটক করা হয়েছে পরিবারের অভিযুক্ত মহিলা, পলাতক তাঁর স্বামী। পুলিস এসে দেখে ওই বাড়ির চারজন সদস্য রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন। শরীরে প্রাণ নেই।
সে এক বীভৎস দৃশ্য। দেবাশিসকে এলোপাথারি কোপাচ্ছে দেবরাজ। দেবরাজের স্ত্রী পল্লবী দেবাশিসের স্ত্রী রেখাকে বেদম মারছে। দেবাশিসের ১৩ বছরের মেয়ে রূপসা ওরফে তিয়াসা, হাওড়া যোগেশ চন্দ্র গার্লস স্কুলের ক্লাস সেভেনের ছাত্রী। সে ঘর থেকে বেরিয়ে কাকা এবং অন্যান্য আত্মীয় প্রতিবেশীদের কাছে আর্ত চিৎকার করে বলছে 'আমার বাবা মা কে মেরে ফেলবে, বাঁচাও।' কিন্তু বাঁচানো গেল না। ছোট বৌমার হামলার হাত থেকে বাঁচতে গিয়ে আহত হয়েছেন দুই আত্মীয়ও। অভিযুক্ত গৃহবধূ পল্লবী ঘোষকে আটক করতে পারলেও পলাতক ছেলে দেবরাজ ঘোষ। সুব্রত ঘোষ, দেবরাজের খুড়তুতো ভাই এবং প্রতিবেশী তার হাতেও ধারাল অস্ত্রের আঘাত আছে। তাঁর কথায়, 'ঘর থেকে বেরিয়ে আসতে বাধ্য হলাম। নাহলে চারের বদলে খুনের সংখ্যা পাঁচ হয়ে যেত। মেরে ফেলত আমাকেও।'
বচসার মধ্যস্থতা করতে এসেছিলেন মা। তাকেও রেয়াত করেনি ছেলে। ১৩ বছরের নাবালিকা ভাইঝিকেও অত্যন্ত নৃশংস ভাবে খুন করা হয়েছে। কেন এই নৃশংসতা? পল্লবীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে উত্তর খোঁজার চেষ্টায় পুলিস। কাল সন্ধের পর প্রথমে অশান্তি শুরু হয়েছিল মূলত পল্লবীর সঙ্গে রেখার। পরে দুই ভাই এই অশান্তিতে জড়িয়ে পড়েন। প্রাথমিকভাবে পুলিসের অনুমান সম্পত্তি নিয়ে দীর্ঘদিনের বিবাদের এই চরম পরিণতি। কিন্তু এই পর্যায়ের নৃশংসতা কি শুধুই এই কারণে? ঘটনা ঘটানোর সময় কার্যত উন্মাদের মতো আচরণ করছিলেন দেবরাজ। পল্লবী-দেবরাজের সাত বছরের ছেলে কিছুটা মানসিক সমস্যার শিকার। কাল তদন্তকারী এক পুলিস কর্মীর হাতে সে দাঁতের কামড় বসিয়েছে। খুন করতে যাতে সে আটকাতে না পারে তাই তাকে ঘরে তালাবন্ধ করে রাখা হয়েছিল।